ছড়িয়ে পড়ছে স্ক্যাবিস, প্রয়োজন জনসচেতনতা

Site Favicon প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৪৬ আপডেট করা হয়েছে: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৪৭

হেলথবার্তা২৪.কম ডেস্ক প্রতিবেদন: ছড়িয়ে পড়ছে স্ক্যাবিস, প্রয়োজন জনসচেতনতা শিরোনামে লিখেছেন ডা. তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী।

মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া। এখন প্রায় প্রতিটি পরিবার সংক্রমিত। এটি একটি জাতীয় রোগে পরিণত হয়েছে। সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শ ছাড়া এ রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ অত্যন্ত কঠিন।

স্ক্যাবিস কী
স্ক্যাবিস ‘সারকোপটিস স্ক্যাবি’ নামক একপ্রকার অণুজীব দ্বারা সংঘটিত হয়। এর প্রধান লক্ষণ হলো শরীরে চুলকানি ও দানা বা বিচির মতো র‍্যাশ ওঠা। এটি স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। তা ছাড়া রোগীর ব্যবহৃত কাপড়চোপড়, বিছানার চাদর, বালিশ ব্যবহার করলে এ রোগ হতে পারে।

স্ক্যাবিসের জীবাণু সারা বছরই প্রজনন করতে পারে, তবে গরম ও আর্দ্র পরিবেশে তাদের প্রজনন দ্রুততর হয়। কারণ, এ ধরনের আবহাওয়া তাদের বেঁচে থাকা ও বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য অনুকূল। এ ছাড়া সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে সহজে ছড়ায় বলে জনবহুল ও গরম স্থানে প্রজননের হার বেশি।

স্ক্যাবিসের লক্ষণ কী
প্রথমেই ত্বকের নানা জায়গায় পানিযুক্ত দানা বা বিচি দেখা দেয় এবং যখন চুলকানি হয়, তখনই এটি দ্রুত শরীরে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে যায়।

রাতে বেশি চুলকানি অনুভূত হয়।

পরিবারের একজন সদস্য আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যরাও আক্রান্ত হয়ে থাকে।

সাধারণত আঙুলের ফাঁকে, ত্বকের ভাঁজে, বুকে-পিঠে, বগলে, যৌনাঙ্গে বা এর আশপাশে, নাভি ও নাভির চারদিকে ছোট ছোট দানা বা বিচি দেখা দেয়। এ ছাড়া পুরো শরীরে দেখা দিতে পারে।

শিশুদের ক্ষেত্রে ঘাড়, মাথার তালু, মুখ, হাতের তালু ও পায়ের পাতার নিচেও হয়ে থাকে।

অনেক সময় আক্রান্ত স্থানে ইনফেকশন, যেমন পুঁজ বা ব্যথাও অনুভূত হতে পারে।

স্কুল, মাদ্রাসা, মেস, হোস্টেল বা অন্যান্য আবাসিক স্থান, যেখানে একত্রে একাধিক লোকজন থাকে, সেখানে এ রোগ দ্রুত ছড়ায়।

স্ক্যাবিস হলে কী করবেন
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা।

পরিবারের যেকোনো সদস্য আক্রান্ত হলে সব সদস্য একত্রে চিকিৎসা নেওয়া।

আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জামাকাপড়, বিছানার চাদর, বালিশের কভার, আন্ডার গার্মেন্টসসহ সব একত্রে গরম পানিতে ভিজিয়ে, রোদে শুকানো।

আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস অন্য কেউ ব্যবহার না করা।

চিকিৎসক ছাড়া অন্য কারও পরামর্শে কোনো ধরনের ওষুধ বা চিকিৎসা গ্রহণ না করা।

আবাসিক হল বা মেসে কেউ আক্রান্ত হলে অন্যত্র গিয়ে আলাদাভাবে চিকিৎসা নেওয়া।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া বা ব্যবহার পরিহার করা।

একটি ভুল ধারণা আছে যে কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার ফলে এ রোগের সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত এটার পক্ষে কোনো গবেষণা প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

চিকিৎসা কী
স্ক্যাবিস হলে পরিবারের সবার চিকিৎসা নেওয়া উচিত। সবার বয়স ও ওজন অনুযায়ী আলাদা আলাদা ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করবেন না।

পারমিথিন ৫ শতাংশ ক্রিম ও লোশন।

মনোসালফিরাম সলিউশন।

ইনফেকশন হলে অ্যান্টিবায়োটিক।

অনেক ক্ষেত্রে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার দেওয়া হয়।

লেখক: ডা. তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী, চর্ম, যৌন, এলার্জি রোগবিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা। ছড়িয়ে পড়ছে স্ক্যাবিস, প্রয়োজন জনসচেতনতা শিরোনামে লেখাটি প্রথম আলো থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

আপনার পছন্দ হতে পারে