হেলথবার্তা ডেস্ক: জীবনে সুখ–দুঃখ দুই–ই থাকবে। জীবনের কোনো না কোনো মুহূর্তে পরম সুখী মানুষটিও দুঃখে ভারাক্রান্ত হন। তবে লম্বা সময় ধরে দুঃখের সাগরে ডুবে থাকলে কিন্তু মুশকিল। এমন দুঃখ স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
১. ঘুমের সমস্যা
দুঃখে থাকলে কারও কারও ঘুম আসে না কিংবা বারবার ঘুম ভেঙে যায়। কেউ কেউ আবার দুঃখে থাকলে অতিরিক্ত ঘুমান। তবে সুস্থ থাকতে এমন পরিস্থিতিতেও আপনাকে ঘুমের সময় ঠিক রাখার চেষ্টা করতে হবে। ঘুমের আগে গোসল, বই পড়া বা শিথিলায়ন করার অভ্যাসও ভালো।
২. ক্লান্তি বা অবসন্নতা
প্রচণ্ড দুঃখে থাকলে মনের শক্তি হারিয়ে যায়। ক্লান্ত, অবসন্ন লাগে। এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে আপনাকে অবশ্যই ঠিকঠাক খেতে হবে। যদিও প্রচণ্ড দুঃখে থাকলে খাওয়ার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলতে পারেন। একটু এদিক–ওদিক ঘুরে আসার মতো সাদামাটা শরীরচর্চাও কাজে আসবে। বন্ধু ও স্বজনদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। অবসন্নতা সামলানো সহজ হবে।
৩. দুশ্চিন্তা
দুঃখের সমুদ্রে ডুবে থাকলে আপনার মনে হতে পারে, নিজের জীবনের কোনো কিছুই আপনার নিয়ন্ত্রণে নেই। প্রিয়জনের মৃত্যু হলে আপনার মধ্যে একা থাকার ভয় কাজ করতে পারে। মনে হতে পারে, আরও কেউ হয়তো হারিয়ে যাবে জীবন থেকে। আর্থিক ধাক্কাও খেতে পারেন।
কিছু দুশ্চিন্তা স্বাভাবিক। তবে দীর্ঘ মেয়াদে দুশ্চিন্তা আপনার স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যে দুশ্চিন্তার জন্য আপনার দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন ঘটছে, সেটিকে অবহেলা করবেন না। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।
৪. স্ট্রেস হরমোনের আধিক্য
কর্টিসল হলো স্ট্রেস হরমোন, অর্থাৎ মানসিক চাপে থাকলে আপনার রক্তে কর্টিসলের মাত্রা বাড়বে। রক্তে এই হরমোনের আধিক্য থাকলে মাথাব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাড়ক্ষয়সহ নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
৫. পেটের সমস্যা
দুঃখ বা অবসাদে অনেকে খাওয়ার সময়সূচি এলোমেলো করে ফেলেন। ফলে হতে পারে অ্যাসিডিটি। দুঃখে থাকলে কেউ আবার খেয়ে ফেলেন অতিরিক্ত। এ থেকেও পেটের সমস্যা হতে পারে। কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে হতে পারে আলসারও। যাঁরা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমে (আইবিএস) আক্রান্ত, মানসিক চাপের কারণে তাঁদের সমস্যাগুলো বেড়ে যেতে পারে।
৬. হৃৎপিণ্ডের ওপর প্রভাব
ভয়ংকর কষ্ট পেলে হঠাৎ তীব্র বুকব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। অনেকটা হার্ট অ্যাটাকের মতো উপসর্গ হলেও এটি হার্ট অ্যাটাক নয়। এটি একেবারেই আলাদা একটি সমস্যা। তবে অতিরিক্ত দুঃখে থাকায় যাঁদের ঘুমের ঘাটতি হয়, তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বুঝতেই পারছেন, দুঃখ পেলেও সুস্থ থাকতে জীবনধারা স্বাভাবিক রাখার বিকল্প নেই। সূত্র: ওয়েব এমডি। দীর্ঘসময় দুঃখ পুষে রাখলে শরীরের যেসব ক্ষতি হতে পারে শিরোনামে লেখাটি প্রথম আলো থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।